Om Shanti's image

জায়গাটার নাম একম্বা। আর মুক্তিদের মামার বাড়ি যেতে হলে আমতলা যেতে হবে। মুক্তি আর শক্তি দুই বোনের সকাল সকাল মামার বাড়ি যাবার কথা। দিদা যেতে বলেছে। ওদের দাদু পার্থসারথি রাহার জন্মদিন আজ। অবশ্য এই জন্মদিনটা কাগুজে জন্মদিন। উনি ঐ গ্ৰামের পোষ্টমাষ্টার ছিলেন। বেশ কয়েক বছর আগেই অবসর নিয়েছেন।

আসল কথা নাতনিদের দেখার জন্যে কিছু না কিছু অজুহাত চাই। আগে তো নিজেই মাসে অন্তত এক দুই বার সাইকেল চালিয়েই চলে আসতেন এই মাইল দুই তিন রাস্তা। ইদানিং আর ততটা উৎসাহ পান না।
সাইকেল থেকে ব্যালেন্স হারিয়ে একবার পড়ে গেছিলেন রাস্তায়। এক আধটু ছড়ে গেছিলো হাতে পায়ে, ভাগ্যিস মাথায় লাগেনি। তারপর থেকেই সাইকেল চালানোতে প্রতিভা দেবীর কড়া বারণ।

মুক্তির স্নান টান সারা হয়ে গেছে। আর শক্তিটা এখনও ঘুমের দেশে। মুখটা বেশ হাসি হাসি। নিশ্চয়ই কোনো ভালো স্বপ্ন দেখছে বুনু । মায়া হয় ডাকতে। কিন্তু কিছু করারও নেই। না ডাকলে ও ঘুমিয়ে ঘুমিয়ে দশটাও বাজাতে পারে।

_______শক্তি, এ্যাই শক্তি, কিরে আজকে তো আমতলা যাওয়ার কথা।  উঠবি ? নাকি চোখে মুখে জল ছিটিয়ে দেবো ?

_______না দিদিয়া, প্লিজ! আর মাত্র সাত মিনিট !

কথাটা বলেই দাঁড়িয়ে থাকা মুক্তিকে টেনে খাটের ওপর বসায় আর হাত দিয়ে পেটটা পেঁচিয়ে ধরে পাশবালিশের মতো।

______বারে! নিজে তো উঠছিসই না, আবার আমার সময় নষ্ট করা ? ছাড় ছাড় !

______বললাম না আর সাত মিনিট!

_______ই__ইস্ !  তোর দু মিনিট পার হয়ে গেছে এতক্ষণে।

মুখে রাগ দেখায় বটে আবার শক্তির বেঁধে রাখা চুলগুলো খুলে খুলে মাথা নেড়েও দেয়।

পাঁচ বছর পরের কথা। মুক্তির বিয়ে হয়েছে পানিশালায়। বর সৌদিতে কাজ করতো। ছেলের জন্মের বছর খানেকের মধ্যেই বাড়িতে ফেরার কথা ছিল। কিন্তু ফিরে আসে বাক্সবন্দি মৃতদেহ। না মুক্তি আর সে দেহ দেখতে চায়নি। ছেলে গোগল, বাবাকে ফোটোতেই দেখে আসছে ছোটোবেলা থেকে।

মুক্তি এখন একজন আশা কর্মী। রাতবিরেতে মানুষ দরকারে ডাকলেও ওর সাহায্য লোকে পায় ।
শক্তি মাধ্যমিক পাশ করার পর পড়াশোনা করার পাশাপাশি কোচিং সেন্টারে ট্রেনিং নিচ্ছে ।  বেশি কিছু না, ভারতীয় সেনায় একটা চাকরি ওর চাই। ও তো ওর দিদিয়ার মতোই লম্বা । খেলাধুলোতেও বেশ ভালো। রোজ নিয়ম করে মাঠেও দৌড়ায়। চাকরি না পেলে বিয়ে করতে রাজি নয় ও কিছুতেই।

মুক্তির মতো মনের জোর ওর নেই। জামাইবাবুর হাসিখুশি চেহারাটা যেন চোখে ভাসে আজও । স্বামী না থাকলে একটা মেয়ে যে কত অসহায়, দিদিয়াকে দেখেই বুঝতে পেরেছে শক্তি। তবু ভালো যে ওর শ্বশুর শাশুড়িকে ও পাশে পেয়েছে। আর একজন মানুষ ওকে খুব সাহায্য করেছে। ওর এক ক্লাসমেট,
মিনতিদি। মিনতিদির স্বামীর সাথে বনিবনা হয়নি বলে ডিভোর্স নিয়ে একা থাকে । ওর দুটো ছোটো মেয়েকে নিয়ে প্রচুর লড়াই করতে হয়েছে। নানা রকম কাজ করতে গিয়ে পরিচিত হয়েছে নানা মানুষের সাথে।

এক অবাঙালী পরিবারের সূত্রে যোগাযোগ হয় এক আয়ুর্বেদিক কোম্পানির নেটওয়ার্ক ওয়ার্রকারের সাথে। তাঁর সাথেই পা রাখে শিববাবার ঘরে। মিনতিদিই মুক্তির অবস্থার কথা শুনে খোঁজ নিয়ে দেখা করতে এসেছিলো পুরোনো বান্ধবীর সাথে। সঙ্গে করে নিয়ে যায় ঐ প্রজাপতি ব্রহ্মাকুমারীর আশ্রমে। ওখানে নিয়মিত যাতায়াত করতে করতেই শক্তির দিদিয়া মুক্তি আবার হাসতে শিখেছে। আশাকর্ম

Read More! Earn More! Learn More!